ইবুক নিয়ে আমার ছোট্ট একটা ফানেল!!

ইবুক নিয়ে আমার ছোট্ট একটা ফানেল শেয়ার করি। শুনবেন?

আমার ওয়েবে আমি তিনটা ইবুক রেখেছি। তিনটা ইবুক ই বিজনেস গ্রোথ নিয়ে। এবং ইবুক গুলো আমি সেল করার চেষ্টা করবো যারা মার্কেটিং এবং বিজনেস প্র‍্যাক্টিস করে তাদের কাছে। আমার একটা ইবুকের দাম ১০০ টাকা। এরকম একটা ইবুক ফেসবুক এডের মাধ্যমে সেল করতে আমার খরচ পরে ৪০-৫০ টাকা। তাহলে পার ইবুকে আমার প্রফিট থাকে ৫০-৬০ টাকা।

প্রফিট ভুলে যান। জাস্ট ধরে নিন ১০০ টাকার একটা ইবুক সেল করতে আমার ১০০ টাকাই খরচ হয়। এর মানে দাঁড়ালো No profit. তাহলে আর বেচা বিক্রি করে লাভ কি এটাই তো ভাবছেন?

আসেন বুঝাই। যেহেতু আমি ডিজিটাল মার্কেটিং কন্টেন্ট সেল করি সো আমার টপ অফ দ্যা ফানেলে প্রচুর মানুষ থাকা দরকার যারা মার্কেটিং এ আগ্রহ রাখে। এখন আমি যদি একটা ব্র‍্যান্ড এওয়ারনেস ক্যাম্পেইন চালিয়ে নিজেকে মার্কেটে পরিচিত করাই তাহলে আমাকে রোজ বেশ বড় একটা এমাউন্ট খরচ করে ফেলতে হবে। অথবা যদি ট্রাফিক ক্যাম্পেইন চালিয়ে আমার ওয়েবে ট্রাফিক আনার ব্যাবস্থা করি তাহলে ও আমাক ভালো একটা এমাউন্ট খরচ করতে হচ্ছে। 

এখন আমি এমন একটা ফানেল বানিয়েছি যা দিয়ে আমি নিজের এবং প্লাটফর্মের এওয়ার্নেস ও ক্রিয়েট করতাছি বাট কোন টাকা খরচ করতাছি না।হ্যা ঠিক ই শুনছেন কোন টাকা খরচ করতাছি না। 

কিভাবে? জাস্ট E-book বিক্রি করে। 

ফানেলটা এখানে শেয়ার করতাছি না অনেক গুলো কারণে। আপনি স্মার্ট মানুষ একটু মাথা খাটালেই বুঝে যাবেন। 

এখন আপনাকে ও এরকম একটা ফানেল বানানোর জন্য আগে ই-বুক টা তো তৈরি করতে হবে। চলুন একটা ই-বুক তৈরি করা শিখি।

ই-বুক লেখাটা আমাদের দেশে যতটা না একটা নতুন কন্সেপ্ট তার চেয়ে বেশি মজার একটা ব্যাপার। কেননা, একটা ইবুক বানাতে গেলে আপনাকে শুধু লিখতেই হবে না পাশাপাশি সেটাকে ডিজাইন, প্রোফেশনালি ফরম্যাটিং করতেও হবে যেন মানুষ সেটা দেখে ডাউনলোড করার আগ্রহ পায়। 

E-Book এর ফুল ফর্ম হল Electronic Book. প্রিন্টেড বইয়ের ইলেকট্রনিক ভার্সন ই মূলত ইবুক। যা বিভিন্ন কম্পিউটার, মোবাইল কিংবা ট্যাবলেটে পড়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইবুক কে পিডিএফ আকারে শেয়ার করা হয় যাতে সহজেই ট্রান্সফার করা যায়।

লিখতে হলে জানতে হবে; তাই যেই টপিকের উপর EBook তৈরি করব সেটার জীবন ইতিহাস পড়ে তার একটা রিসার্চ করে ফেলতে হবে। এতে করে সেই টপিকের অসংখ্য পয়েন্ট পাওয়া যাবে যেগুলো ধরে আপনি সামনে আগাবেন। পয়েন্ট গুলো হতে পরে সেই টপিকের কোন রিসার্চ, কেস স্টাডি, প্রোডাক্ট ডিটেইলস, বেস্ট প্র‍্যাক্টিস, অনেক ডাটা আর সেই টপিক রিলেটেড প্রচুর Unsolved Question (FAQ)। মানে দাড়াল রান্নার সব মসলা আপনি রান্না ঘরে জড়ো করলেন, এবার পালা রান্না করার…

এইবার হচ্ছে সিদ্ধান্ত নিন আপনি টপিকের ঠিক কোন কোন পয়েন্ট (চ্যাপ্টার) গুলো নিয়ে EBook টা সাজাবেন। আর এই সিদ্ধান্তটা নিতে হবে প্রচুর প্রশ্ন-উত্তরের ভিতর দিয়ে। এই ধরুন আপনি সিলেক্ট করা টপিকের কোন প্রবলেম গুলো সলভ করতে চাচ্ছেন এবং এই প্রবলেম সলভ করার আলটিমেট পারপাসটা কি, কিভাবে সলভ করবেন, সলভ করতে কি ধরনের ডাটা এবং গ্রাফিক্স ইউজ করবেন, প্রতিটা চ্যাপ্টারের হেডিং কপি কি ইউজ করবেন এইসব কিছুই এই পর্বে ডিসাইড হয়ে যাবে। এরপরই শুরু হবে মূল কাজ, আর সেটা হল লিখালিখি।

হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র‍্যাক্টিস করতে চান?

এখন প্রতিটা পয়েন্ট ধরে ধরে এমনভাবে লিখতে হবে যাতে এইটা পড়ার পর এই রিলেটেড করার মত কোন প্রশ্ন না থাকে। এভাবে প্রতিটা পয়েন্ট ডিস্ক্রাইভ শেষ হলে প্রতিটা পয়েন্ট হয়ে যাবে এক একটা চাপ্টার আর আপনার হাতে চলে আসবে EBook এর সাদাকালো পাণ্ডুলিপি।বাকি থাকল রং করা।

এইবার আসেন দেখি কিভাবে EBook টাকে রঙিন করা যায়। প্রতি চ্যাপ্টারে রেফারেন্স সহ যে ডাটাগুলো ইউজ করছেন সেগুলোর ইনফ্রোগ্রাফিক বানিয়ে ডাটার নিচে বসিয়ে দিন। এরপর আসেন গ্রাফিক্স এর গল্পে, চ্যাপ্টারের মাঝে যতগুলো গল্প বলেছেন সবগুলো গল্পের ভিজুয়াল বানিয়ে কাকতাড়ুয়ার মত দাড় করিয়ে দিন যাতে পাঠক চাইলেও ডিসট্র্যাক্ট হতে না পারে। রং করার পর যদি আরো ইনটোরিওর ডিজাইন করতে চান তবে বইয়ের কনটেন্ট গুলোকে বন্ধুমহলের আড্ডার মত করে লিখার ট্রাই করুন, এমন ভাবে লিখুন পড়ার সময় পাঠক যাতে বুঝতেই না পারে যে আপনি তার অপরিচিত কেউ। 

এখন আপনার মনে হতে পারে মূল্যবান সময় ব্যায় করে কেন ইবুক লিখবেন। তো চলুন প্রথমেই ইবুক লেখার কিছু বেনিফিট দেখে আসা যাক।

১. প্রিন্টেড বই দেখা যায় সবসময় সব জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়না কিন্ত ইবুক চাইলেই যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় চাইলেই পড়া যায়।

২. আপনি ইবুক এর লোভ দেখিয়ে অডিয়েন্স থেকে লিড জেনারেট করতে পারেন।

৩. তাছাড়া ইবুক বানালে আপনি যত ইচ্ছা তত মানুষের কাছে ফ্রি অফ কস্টে পৌছে দিতে পারবেন।

৪. তাছাড়া আপনি বিভিন্ন লেখা বা কন্টেন্ট এর সাথে লিংক কানেক্টেড করে দিতে পারবেন।

৫. ইবুক স্টোর করতে কোনো ফিজিকাল স্টোরেজ প্রয়োজন হয়না।

৬. তাছাড়া ইবুককে চাইলেই প্রিন্ট করে নরমাল বইয়ের মত বানিয়ে ফেলা যায়।

৭. ইবুক কে চাইলে ফন্ট বড় ছোট করে কিংবা Text to speech অপশন ইউজ করে অডিও আকারেও শোনা যায়।

৮. তাছাড়া সার্চ অপশন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু খুজে পাওয়া যাবে।

ইবুক এর বেনিফিট আমরা একদম পুরোদমে বুঝে গেছি। এবার আসা যাক এই ইবুক কিভাবে লিখব তা নিয়ে গল্পে।

★ প্রথমেই এমন একটা টপিক সিলেক্ট করুন যা আপনার অডিয়েন্স এর জন্য খুবই দরকার। মনে রাখবেন ইবুক লেখার অন্যতম একটা গোল থাকবে যেন আপনি লিড জেনারেট করতে পারেন অর্থাৎ অডিয়েন্স যেন যেকোনো কিছুর বিনিময়ে ইবুকটা লুফে নেয়। এজন্য অবশ্যই নিশ হতে হবে অডিয়েন্সের প্রায়োরিটি অনুযায়ী। যেমনঃ আপনার অডিয়েন্স যদি হয় মার্কেটিং লাভার তবে আপনার ইবুক টা হবে মার্কেটিং রিলেটেড বিভিন্ন টিপস এবং হ্যাক নিয়ে।

★ প্রথমেই আপনার ইবুকের একটা আউটলাইন তৈরি করে নিন। যেখানে এই ইবুকে কি কি নিয়ে আলোচনা থাকবে, এই ইবুক কেন পড়া প্রয়োজন, কাদের পড়া প্রয়োজন ইত্যাদি। আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে ইবুকে একটা টপিক থেকে অন্য টপিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে ফ্লো বজায় রাখতে হবে। ইবুক লেখার ক্ষেত্রে একটা হ্যাক হল অবশ্যই ইবুকে যেন ইম্পর্টেন্ট তথ্য ব্যাতিত অন্য কিছু না থাকে। এতে আপনার ইবুক ৫ পেইজ হোক বা ৫০ পেইজ হোক তবুও ইবুকে ইম্পর্টেন্ট তথ্য ব্যাতীত অন্য ওয়ার্ড ইউজ না করাই বেটার। 

★এরপর যেটা করতে হবে সেটা হল ইবুক ডিজাইন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে কালার সিলেক্ট করাটা একটা ইম্পর্টেন্ট বিষয়। আপনাকে অবশ্যই একটা এট্রাক্টিভ কালার সিলেক্ট করতে হবে যেন লেখা কিংবা ডিজাইন সুন্দর মত চোখে পড়ে এবং বোরিং ফিল না হয় অডিয়েন্স। তাছাড়া এতে অবশ্যই আপনাকে ব্রান্ড কালার ইউজ করতে হবে। 

এইবার আসেন তরকারির লবণ নিয়ে, মানে CTA আর কি। EBook থেকে আপনি পাঠককে নেক্সট কোন ফানেলে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন? বইয়ের মাঝখানে লিংক প্লেইস তো করবেনই কিন্তু সবার লাস্টে স্পেসিফিক CTR দিতে ভুল করলে EBook হয়ে যাবে লবণ ছাড়া তরকারির মত, এই রান্না আপনি খেতেই পারবেন না কখনো। স্পেসিফিক CTR মানে হল Let’s Talk about Your Suffering বা Claim yours (10 left) এমন কিছু যা CTR এ ক্লিক করার জন্য পাঠককে যথেষ্ট কারণ দিবে।

তো এই হল একটি ebook তৈরির গল্প। অন্য কোথাও অন্য কোন গল্প নিয়ে কথা হবে কিন্তু আজ যেতে যেতে এইটা টিপস দিয়ে যায়, EBook এর কভারটা হবে ডেম হট, এট্রাকটিভ, বিউটিফুল, ডেসিং, ওসাম, হ্যান্ডসাম আরো যা কিছু হওয়া যায়।

যদি হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেকে মার্কেটে স্টাবলিশ করতে চান তবে এখনি এনরোল করে ফেলুন আমার প্রিমিয়াম কোর্স:

​​​​​”Digital Marketing RoadMap” এ…

Share:

"ইফেক্টিভ ফানেল স্ট্রেটিজি" ফ্রি ইবুকটি ডাউনলোড করতে নিচের ফর্মটি ফিলাপ করুন

আরো ব্লগ

লিড জেনারেশন করলে অডিয়েন্স থাকবে হাতের মুঠোয়!!

আমরা যারা অনলাইনে বিজনেস করি আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা ম্যাসেঞ্জারে ক্লায়েন্টের সাথে ডিল ক্লোজ করতে পারি না। আমরা ম্যাসেজ তো পাই হাজারে

ভিসিবিলিটি ইজ মোর ইম্পরটেন্ট দ্যান এভেইলেবেলিটি

চা খেতে বের হয়েছিলাম। প্রথম চুমুক টা দিতেই অপর পাশের মুদি দোকানে চোখ গেলো। একজন লোক শার্ট প্যান্ট ইন করে তেলের বোতল গোছাচ্ছে। মোটামুটি ১৫/২০

লগরিদম ভাল না লাগলেও আপনাকে এলগরিদম জানাই লাগবে!!

আমরা যারা ফেসবুকের এডভারটাইজমেন্ট নিয়ে কাজ করি আমাদের সব থেকে বড় প্রব্লেমটা কি জানেন?  প্রব্লেমটা হলো আমরা লাখ লাখ টাকার এড  ফেসবুকে ঠিকই চালাই কিন্তু

আই লেভেল ইজ বায় লেভেল!

ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে, Where there is will, There is a way. আর তাই কাস্টমারের সোস্যাল বিহেভিয়ার বা পারচেজ বিহেভিয়ারে প্রভাব ফেলতে দিনের পর দিন