আমরা যারা ফেসবুকে এড ক্যাম্পেইন চালাই এটা আমাদের অনেকের কাছেই একটা কমন প্রশ্ন।
১ ডলার সমান আসলে কত টাকা?
এই প্রশ্নটার উত্তর আসলে খুবই সহজ কিন্তু মার্কেটে এটা নিয়ে নানা ধরনের ভ্রান্ত ধারণা থাকার
ফলে আমরা কম বেশি সবাই একটু কনফিউশানের মধ্যে দিন কাটাই।
আসেন আজ আপনার কনফিউশান দূর করে দেই। আমি যেদিন কন্টেন্টটা লিখতাছি সেদিন
হিসেবে ১ ডলার সমান ১০৪ টাকা। কিভাবে জানলাম ১০৪ টাকা? খুব সহজ তো, এইটাই
আজকের দিনে বাংলাদেশ ব্যাকের নির্ধারণ করা ডলার রেট। আপনি হয়তো ভাবতাছেন কিরে
ভাই অমুকে বলে ১২০ টাকা, তমুকে বলে ১৪০ টাকা আর আপনি বলতাছেন ১০৪ টাকা।
হইলো কিছু?
দাঁড়ান দাঁড়ান, শেষ করি। যখন প্রশ্ন আসে ১ ডলার সমান কত? উত্তর তখন ওই একই।
আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা ডলার রেট যা তাই।
তবে, এইখানে দুইটা ঘাপলা আছে।
ঘাপলা নাম্বার ১: জুন ২০২১ এ বাংলাদেশ সরকার ফেসবুকের উপর লোকাল ট্যাক্স রেটে Value
Added Tax বা VAT এপ্লিকেবল করে। অর্থাৎ বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংক কার্ড বা যে কোন
চ্যানেল ব্যাবহার করে একজন এডভারটাইজার যদি ১ ডলার বা ১০৪ টাকা খরচ করে তবে
সেই এডভারটাইজারের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক লোকাল রেটে ১৫% Vat আদায় করবে।
তাহলে বাংলাদেশে সরকারের Vat আইন অনুযায়ী আপনি ফেসবুক এডের প্রতি ডলারের জন্য
খরচ করছেন ১০৪ টাকা + ১০৪*১৫% টাকা = ১০৪ + ১৫.৬ টাকা। মানে ১১৯.৬ টাকা।
আশা রাখি এত টুকু আপনি একদম পানির মতন ক্লিয়ার। কিন্তু ওই যে বললাম ঘাপলা ২ টা
আছে।
হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র্যাক্টিস করতে চান?
ঘাপলা নাম্বার ২: যদি ও আপনার ব্যাংক আপনার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা না করেই ডলার প্রতি
১১৯.৬ টাকা কেটে ফেলতাছে। কারণ ভ্যাট দিতে আপনি বাধ্য। এবং এই ভ্যাট দিতে আমাদের
এডভারটাইজার দের কোন সমস্যা ও নাই। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। সমস্যাটা হলো যদি
আপনি ভ্যাট দেন তবে আপনার মাস্ট একটা Business Identification Number (BIN) থাকা
লাগবেই। যদি আপনার সেই BIN না থাকে তবে আপনাকে আরো ও ১৫% ভ্যাট দেয়া লাগবে।
কি যন্ত্রণা! বাট নাথিং টু ডু।
সো পুরো গল্পের সামারি হলো, প্রতি ১০০ টাকায় আপনি ১৫% মানে ১৫ টাকা ভ্যাট তো
দিবেন ই, আবার যদি আপনার ১৫% ভ্যাট দেয়ার পর BIN না থাকে তবে আপনাকে আরো
১৫% মানে ১০০ টাকার উপর আরো ১৫ টাকা দেয়া লাগবে। মোট ভ্যাটের পরিমাণ দাঁড়াল
তবে ১০০ + ৩০ টাকা মানে ১৩০ টাকা। আর যদি আপনার BIN ID থাকে তবে আপনাকে
ভ্যাট দিতে হবে শুধু ১৫% মানে ১১৫ টাকা।
এতো গেলো ভ্যাটের গল্প। এবার ধরেন আপনার ভাই এই ব্যাংক কার্ড যোগান দেবার ই কোন
উপায় নাই কারণ আপনার একটা পাসপোর্ট নাই তাইলে আপনি কি করবেন?
আপনার জন্য একটা সহজ উপায় হলো একটা ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার করা। যদি ও ভার্চুয়াল
কার্ডের ব্যাবহার আমি সাজেস্ট করি না। তবে এরকম একটা অপশন আছে জাস্ট এটা আপনাকে
জানিয়ে দিলাম। যদি জিজ্ঞাসা করেন ভার্চুয়াল কার্ড কি তবে এক কথায় উত্তর দিতে পারি
একটা, বেশ কিছু প্লাটফর্ম এভেইলেবল আছে যারা আপনার NID Card এবং এক কপি ছবির
বিনিময়ে আপনাকে একটা ভারচুয়াল কার্ড প্রোভাইড করবে। এবং আপনার যখন ডলারের
প্রয়োজন হবে আপনি তাদের ওয়েবে গিয়ে বাংলা টাকা প্রোভাইড করে আপনার কার্ডে ডলার
রিচার্জ করে নিতে পারবেন তাদের মাধ্যমে যে কোন জায়গা থেকে যে কোন সময়ে।
আমাদের আজকের এই কন্টেন্টের মূল ইদ্দেশ্য ছিলো আপনাকে ডলার রেট সম্পর্কে জানানো।
সাথে ভার্চুয়াল কার্ড বলে যে কিছু একটা আছে সেই তথ্যটা জানিয়ে রাখলাম যদি কখনো
কোথাও লেগে যায়।