ROI না বুঝলে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ই লস!!

তবে এর মানে এই না যে কন্টেন্ট শুধু আপনার সেলস ই জেনারেট করবে। কন্টেন্ট আপনার ব্র‍্যান্ডকে ও রিপ্রেজেন্ট করবে।

ডিজিটালের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ই হলো এই কন্টেন্ট। কেন কন্টেন্ট? দেখুন পুরো পৃথিবীতে প্রতিদিন ২৫০+ বিলিয়নকন্টেন্ট আপলোড হচ্ছে। এখন এই বিলিয়ন বিলিয়ন কন্টেন্টের ভিড়ে মানুষ কেন আপনার কন্টেন্ট পড়বে? কেন? উত্তর একদম সহজ, পড়বে তখন ই যখন আপনি তাকে পড়াতে পারবেন।

আমরা যদি ফেসবুকে এডভারটাইজমেন্ট করতে যাই পুরো এডভারটাইজমেন্ট জার্নিকে আমরা মোটামুটি চারটা ভাগে ভাগ করতে পারি।

  1. স্ট্র‍্যাটেজি
  2. এড ক্রিয়েটিভ
  3. এড কপি
  4. কন্টেন্ট

চলুন বিস্তারিত জানা যাক। 

ক্যাম্পেইনের শুরুতেই আপনাকে স্ট্র‍্যাটেজি বানাতে হবে অর্থাৎ এই ক্যাম্পেইন কার জন্য, এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য কি, আমার ব্র‍্যান্ডের পারসোনালিটি কি, আমার বায়ার পারসোনা কি। এই ব্যাপার গুলো আগেই আমাদেরকে প্ল্যান করে নিতে হবে। এখন দিন শেষে যদিও আপনার উদ্দেশ্য সেল করাই কিন্তু শুরুতেই এই কাজটা করতে যাবেন না। কারণ আপনার টিজি বা টার্গেট গ্রুপ সম্ভবত এখনো ওয়ার্ম না। সো কোল্ড অডিয়েন্সের কাছে  বেচা বিক্রি করতে গেলে টাকা পয়সা লস দিয়ে আসা ছাড়া উপায় নাইকোন।

সো শুরুতেই আমরা চেষ্টা করবো আমাদের অডিয়েন্সের এটেনশান নেয়ার জন্য, তাকে আমার কন্টেন্টের সাথে এনগেজ করার জন্য। এই যেমন এখন আপনি আমার কন্টেন্ট পড়ছেন। 

তারপরই আসে ডিজাইন বা ক্রিয়েটিভের পার্ট। দেখেন মানুষ যখন সোস্যাল মিডিয়াতে ঢুকে সে এক্সাক্টলি করে কি? জাস্ট স্ক্রল আর স্ক্রল তাই না? তাহলে একজন মার্কেটার হিসেবে আপনার কাজ কি? আপনার অডিয়েন্সের স্ক্রলিং থামানো। কারণ যদিসে না থামে তবে সে আপনার কন্টেন্ট কিভাবে পড়বে? আপনার কন্টেন্ট যদি সে না পড়ে তাহলে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে সে কিভাবে জানবে? আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে সে যদি না জানে তাহলে আপনার প্রোডাক্ট সে কেন কিনবে বা কিভাবে কিনবে?

হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র‍্যাক্টিস করতে চান?

ধরুন আপনার ডিজাইন দেখে একজন অডিয়েন্স থেমে গেছে। এখন প্রশ্ন আসে সে কি আপনার কন্টেন্ট পড়বে নাকি ডিজাইন দেখেই আপনার কন্টেন্টকে স্কিপ করে চলে যাবে। আর এখানেই আসে এড কপি এর খেলা। আগে বলি এড কপি কি। এড কপি হলো একটা কন্টেন্টের সামারি, যেটা লিখা থাকে একটা ডিজাইনের উপরে। যেটাকে আমরা ক্যাপশন বলে ও চিনি অনেকে। এই এড কপি এর কাজ হলো একজন পটেনশিয়াল কাস্টমারকে আপনার কন্টেন্ট পড়তে ট্রিগার করা। এই যেমন ধরুন যদি আপনার ডিজাইনে লেখা থাকে Get the BOGO  মানে Buy one get one free. আপনি কন্টেন্টে যতই BOGO ম্যানশন করেন নাকেন সেটা কিন্তু কাস্টমারের চোখে পড়ে না। কাস্টমারের চোখে পড়া এড কপিতে বড় বড় করে কালারফুল অক্ষরে সুন্দর করে লিখা BOGO শব্দটা। আর এই BOGO একজন কাস্টমারকে কন্টেন্ট পড়তে যেতে বা একশন নিতে বাধ্য করে। 

কাস্টমার থামলো, এড কপি পড়ে কন্টেন্ট পড়তে আসলো। এবার খেলা কন্টেন্টের।  আপনার কন্টেন্ট যদি কথা বলে তবেইআপনার অডিয়েন্স আপনার কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিনবে। এবার চলুন আমরা কন্টেন্ট নিয়ে খানিকটা গল্প করি। কন্টেন্টকেমূলত দুইটা ভাগে ভাগ করা যায়।

  1. Technical Content: এ ধরনের কন্টেন্টের অব্জেক্টিভ থাকে প্রোডাক্টের ফিচার কে তুলে ধরা
  2. Creative Content: এ ধরনের কন্টেন্ট এর অব্জেটিভ হলো প্রোডাক্ট বা ব্র‍্যান্ড সম্পর্কে কাস্টমারের Trust and Rapport তৈরি করা।

এই খানে আপনাকে আমি কন্টেন্ট সম্পর্কে এমন এক ধারণা দিব যে আপনি টাস্কি ও খেয়ে যাতে পারেন। আচ্ছা বলুন তো কন্টেন্ট মানে কি? আপনার সম্ভাব্য উত্তর যা হতে পারে আমি বলি, কন্টেন্ট মানে হলো লেখা, লেখা আর লেখা। কোন প্রোডাক্টবা সার্ভিস সেল করার জন্য প্রোডাক্ট বা ফিচারের ডিটেইল রিটেন ফর্মেট ই হলো কন্টেন্ট।

যদি উপরের ডেস্ক্রিপশান টাই আপনার মনের মধ্যে উঁকি মারে তবে আপনি ভুল পথে আছেন। আসেন কন্টেন্ট ফরম্যাট বুঝি।

যদি আমরা কন্টেন্ট ফরম্যাট নিয়ে আলাপ করি। তাহলে আমরা পাবো কন্টেন্টের ৩ টা ফরম্যাট আছে। 

  1. রিটেন ফরম্যাট: অর্থাৎ আপনি যা ভাবতেন এটা তাই। উদাহরণ দিলে ম্যাগাজিন, নিউজপেপার, বই, পিডিএফ, ব্লগ ইত্যাদি মিডিয়ার লেখালেখি কে বুঝায়।
  2. ভিজুয়াল ফরমেট: এর মানে হলো যা কিছু আমরা দেখি সেগুলাকে ও কন্টেন্ট বলা হয়। কারণ কন্টেন্ট মানেই হলো ইনফরমেশান পাসিং থ্রু এ ভেলিড মিডিয়া। সো যেহেতু একটা ছবি, ভিডিও, ফটোগ্রাফ বা এনিমেশানের মাধ্যমে  ইনফরমেশান পাস হয় সো এগুলা ও কিন্তু কন্টেন্ট।
  3. অডিও ফরম্যাট: রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে মাঝে মধ্যে যে বিরাট শব্দে প্রিয় ব্যান্ডের মিউজিক শুনেন বা ইউটিউবে গিয়ে বা কোন পডকাস্ট চ্যানেলে গিয়ে আপনার ফেভারিট কোন মানুষের গান বা কথা শুনেন এটা ও কিন্তু কন্টেন্ট।

কন্টেন্ট যেই ফরম্যাটেই থাকুক না কেন মার্কেটিং এ কন্টেন্টের কাজ কি এটা হয়তো এখন আপনার মনের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। 

কন্টেন্টের আসলে অনেক কাজ রয়েছে। আমার কোর্সের ভেতরে আপনি কখনো প্রবেশ করলে হয়তো জানতে পারবেন। তবে যেইদুইটা কাজের কথা না বললেই নয় তা হলো। 

  1. Content to Make a Brand
  2. Content to Sell

কন্টেন্ট মার্কেটিং মানে কিন্তু শুধুই কন্টেন্ট লেখালেখি না। বরং কাস্টমারকে একটা জার্নিতে নিয়ে যাওয়া। আর এই জার্নির শুরু কাস্টমারের Pain and Gain থেকে। অর্থাৎ আপনার কাস্টমারের আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটে কি পেইন আছে সেটা খুজে বের করতে হবে আপনাকে এবং সেই পেইনের কি সলিউশান আপনি দিতে পারবেন যেটা তার কাছে গেইন বলে মনে হবে এটাই আপনাকে ফাইন্ড আউট করতে হবে এবং আপনার কন্টেন্টের মাধ্যমে তাকে তা জানাতে হবে। তবেই তো আপনার একজন পটেনশিয়াল কাস্টমার আপনার কাস্টমারে কনভার্ট হবে।

কন্টেন্ট মূলত যেই কাজটা করে তা হলো, কন্টেন্ট বিজনেস এবং কাস্টমারের মধ্যে লয়ালটি তৈরি করে, কনভার্সান রেট বাড়িয়ে দেয়, প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস সম্পর্কে আমাদের অডিয়েন্সকে এডুকেট করে।

ধুম ধারাক্কা কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে পারলে প্রোডাক্ট সেম বাট এপ্রোচ চেঞ্জ করে ও কিন্তু Blue Ocean Marketing তৈরি করা যায়। যেমন ধরুন আপনি হয়তো চাইনিজ সস্তা প্রোডাক্ট সেল করেন, কিন্তু এটা কখনোই কমিউনিকেশান করা যাবে না এভাবে।বরং আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো Approach Change + Value Addition. আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কি আসলেই চাইনিজ সস্তা প্রোডাক্ট সেল করতাছেন নাকি মানুষের লাইফকে সহজ করতাছেন?

কাস্টমারকে এভাবেই ফিল দিন you are not selling product rather you are selling solution. তবেই তো আপনার কাস্টমার আপনার প্রেমে পরবে আপনার সাথে এনগেজ হবে। আর আপনার সাথে তারা যখন এনগেজ হবে আপনি Facebook Auction এ জিতে যাবেন আপনার ad cost কমা শুরু করবে এবং সেল বেশি আসবে।

চলুন একটা স্টোরি টেলিং মেথড শিখিয়ে দেই। একটা চমৎকার স্টোরি টেল করতে গেলে আপনাকে তিনটা এসেনশিয়াল ইলেমেন্টের দিকে নজর দিতে হবে।

  1. Characters
  2. Conficts
  3. Solution

Character মানে হলো পারসন। এটা আমি, আপনি বা সে ও হতে পারে। আর Conflict মানে হলো প্রব্লেম বা নিড। আর Solution মানে হলো উপরের প্রব্লেমের সমাধান।

এই যেমন ধরুন আমি যখন এই কন্টেন্টটা লিখছি তখন বাইরে অনেক ঠান্ডা। সো আমরা একটা জ্যাকেটের গল্প লিখে ফেলি বাস্তবতার সাথে মিল রেখে।

একজন জ্যাকেট বিক্রেতা কিভাবে তার প্রোডাক্ট নিয়ে  স্টোরিটেলিং করতে পারে দেখুন, আমি একজন জ্যাকেট, তুমি কি ঠান্ডার ভয়ে বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছ? তাহলে আমাকে তোমার সাথে করে তোমার বাসায় নিয়ে চল।

কি ছোট্ট একটা Humanize গল্প হয়ে গেলো না? এধরনের স্টোরি টেলিং মানুষ পছন্দ করে এবং আপনার সাথে এনগেজমেন্ট ক্রিয়েট করে।

লেখাই যদি সেল বাড়ায়? আসেন কন্টেন্ট নিয়ে আরেকটা ছোট্ট গল্প শুনি।

২০০১ সালে প্রথম যখন iPod বাজারে আসে স্টিভ জবস কে তখনকার সেরা মার্কেটার রা ও বলেন, এ প্রোডাক্ট চলবে না।একদম ই না। কারণ ওই সময় MP3 এর যেই দাম ছিল একটা iPod এর দাম প্রায় তার দশগুণ ছিল, কিন্তু স্টিভ জবস পুরো ব্যাপারটা কেই একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। 

সেই চ্যালেঞ্জ এপ্লাই করার দিন টা ছিল iPod এর উদ্ভোধনের দিন টা, এবং মজার ব্যাপার হলো সকল বড় বড় মার্কেটার দেরভুল প্রমাণিত করে স্টিভ iPod নিয়ে তুলকামাল কান্ড করে ফেলেন। 

কেন যানেন?

কারণ একটাই, আর সেটা হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং।

স্টিভ একটা কথাই বলেছিলেন-

Thousands of song in your pocket….

একবার ভাবেন তো, আপনি মিউসিক লাভার মানুষ। যখন ই আপনার মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হবে আরেহ ভাই আমার প্রোডাক্ট কিনলে কি পাবা যান? নিজের পকেটেই ১০০০ টা গান। 

ব্যাস আর কি লাগে…

মজার কথা হলো একটা mp3 তে ও কিন্তু এক হাজার গান রাখা যেত, কিন্তু কেও কখনো হিসাব করে বলে দেয় নি। মিউসিক লাভাররা ও কিন্তু ভেবে দেখেনি।

এটাই হলো পাওয়ার অফ কন্টেন্ট মার্কেটিং। মার্কেটিং দিনে দিনে চ্যাঞ্জ হচ্ছে। এখন আর মার্কেটার রা প্রোডাক্ট সেল করতে চায়না, বরং তারা কন্টেন্ট সেল করে। আর সেই কন্টেন্ট ই কিন্তু কাস্টমার নিয়ে আসে।

যদি হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেকে মার্কেটে স্টাবলিশ করতে চান তবে এখনি এনরোল করে ফেলুন আমার প্রিমিয়াম কোর্স:​​​​​”Digital Marketing RoadMap” এ…

Share:

"ইফেক্টিভ ফানেল স্ট্রেটিজি" ফ্রি ইবুকটি ডাউনলোড করতে নিচের ফর্মটি ফিলাপ করুন

আরো ব্লগ

লিড জেনারেশন করলে অডিয়েন্স থাকবে হাতের মুঠোয়!!

আমরা যারা অনলাইনে বিজনেস করি আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা ম্যাসেঞ্জারে ক্লায়েন্টের সাথে ডিল ক্লোজ করতে পারি না। আমরা ম্যাসেজ তো পাই হাজারে

ভিসিবিলিটি ইজ মোর ইম্পরটেন্ট দ্যান এভেইলেবেলিটি

চা খেতে বের হয়েছিলাম। প্রথম চুমুক টা দিতেই অপর পাশের মুদি দোকানে চোখ গেলো। একজন লোক শার্ট প্যান্ট ইন করে তেলের বোতল গোছাচ্ছে। মোটামুটি ১৫/২০

লগরিদম ভাল না লাগলেও আপনাকে এলগরিদম জানাই লাগবে!!

আমরা যারা ফেসবুকের এডভারটাইজমেন্ট নিয়ে কাজ করি আমাদের সব থেকে বড় প্রব্লেমটা কি জানেন?  প্রব্লেমটা হলো আমরা লাখ লাখ টাকার এড  ফেসবুকে ঠিকই চালাই কিন্তু

আই লেভেল ইজ বায় লেভেল!

ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে, Where there is will, There is a way. আর তাই কাস্টমারের সোস্যাল বিহেভিয়ার বা পারচেজ বিহেভিয়ারে প্রভাব ফেলতে দিনের পর দিন