Unstructured একাউন্ট থেকে Sell বের করার গল্প…!

Unstructured একাউন্ট থেকে Sell বের করার গল্প…!

আমি চাকরি ছাড়ছি সেই ২০২০ সালে তারপর ও আমি কিন্তু এখনো টুকটাক রিমোট জব করি মিডিয়া বায়ার হিসেবে। তবে আমার শর্ত একটাই কোম্পানীকে অবশ্যই স্টার্টআপ স্টেজের কোম্পানী হতে হবে এবং মাসে ২-৫ হাজার বা তার বেশি বায়িং করার ক্যাপাসিটি থাকতে হবে এবং মাস্ট মাস্ট ওয়েব বেজড সেলস করতে হবে। তো গেল বছর অগাস্ট মাসে আমি দেশ সেরা একটা হেলথ কেয়ার কোম্পানী জয়েন করি রিমোট মিডিয়া বায়ার স্ট্রেটেজিস্ট হিসেবে। এবং প্রথম মাসেই প্রায় ৭০০০ ডলার বায়িং করি। এই ৭০০০ ডলারের মধ্যে ৭০০-৮০০ ডলার ছিল একটা সাক্সেস্ফুল ইভেন্টের পিছনে করা।

আমি জয়েন করার পরের সপ্তায়ই আমাকে জানানো হয় মেন্টাল হেলথ রিলেটেড একটা ইভেন্ট তারা অর্গানাইজ করতে যাচ্ছে এবং আমাকে সেই ইভেন্টের জন্য ১০০০ টিকেট সেল করতে হবে।

এখানে আমার একতা স্ট্রেন্থ ছিলো যেহেতু প্রোডাক্ট হচ্ছে ইভেন্ট টিকেট এবং ইভেন্টে কেও সাধারণত একা আসে না। তাই আমাদের বাস্কেট সাইজ ২ এর নিচে সাধারণত হবার কথা না। সো এভারেজে ২ ইউনিট সেল করা গেলে আমাকে মেইনলি ট্রাঞ্জেকশন করাতে হচ্ছে ৫০০ পটেনশিয়াল কাস্টমারের কাছে। 

বলে রাখি ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য এটাই ছিল আমার প্রথম মিডিয়া বায়িং সো আমি তাদের অডিয়েন্স স্ট্রাকচার সম্পর্কে কোন আইডিয়া ই রাখি না। এর মধ্যে আমাকে পরতে হইছে দারুণ একটা বিরম্বনায়।

বিরম্বনা ১. তাদের কোন বিজনেস ম্যানেজার নাই তারা বিগত দিন গুলোতে কাজ করে এসেছে শুধু মাত্র একটা পারসোনাল এড একাউন্ট থেকে।

বিরম্বনা ২. আমার আগে যিনি কাজ করেছেন তিনি আমাকে ডাটাবেস বুঝিয়ে দিয়ে যাননি, সো প্রচুর স্টাডি করা লাগছে আমার ডাটাবেস বুঝে উঠার জন্য। এখানে আমার একটা বড় সময় নষ্ট হয়েছে।

বিরম্বনা ৩. তারা এই ইভেন্টের জন্য বা এর আগে যত ইভেন্ট করেছে কোনটার জন্যই কোন ধরনের ল্যান্ডিং পেজ তৈরি করেনি এবং আজ ও তা নাই।

একটু হতাশ হলাম কিন্তু নিরাশ হলাম না। সো শুরুতেই ডেভেলপার এর সাথে বসলাম বসে একটা ল্যান্ডিং পেজ প্ল্যান করলাম এবং বানিয়ে ও নিলাম। এখন অডিয়েন্সকে সেই ল্যান্ডিং পেজে এনে ভ্যালু দেয়া প্রয়োজন। আমি Early Bird Registration অফার দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ম্যানেজমেন্ট কোন ডিস্কাউন্ট দিতে রাজি না। উপায় না দেখে একটা নতুন ধরনের Early Bird প্ল্যান সাজালাম। ওয়েবে ম্যানশন করে দিলাম অমুক তারিখের মধ্যে জয়েন করলে লাকি ২০ জন কে স্টেজে ডেকে এনে ২০ টা বই উপহার দিব এবং এই অফারটা যেমন ইভেন্টে ভ্যালু এড করেছে তেমনি বেশ কাজে ও এসেছে।

এইখানে একটা কথা বলে রাখি, আমি যেখানেই অনবোর্ড হই না কেন ট্রাই করি HTTPOOL এর অথরাইজ এড একাউন্টে ক্লায়েন্টকে শিফট করতে। এখানে ও ব্যাতিক্রম হয় নাই। নতুন বিজনেস ম্যানেজার ও হাতে এসে গেছে, কিন্তু সমস্যা হল ম্যানেজারে তো পিক্সেল ও নাই ডাটা ও নাই। তাই খানিকটা বাধ্য হয়েই দুইটা পিক্সেল নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। একটা পিক্সেল থেকে অডিয়েন্স পাঠাতে হইছে আরেকটা পিক্সেলকে ডাটা জমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য রেডি করতে হইছে।

এবার আসেন ক্যাম্পেইনে যাবার পালা। আমার হাতে ছিলো:

একটা ল্যান্ডিং পেজ

৫ টা ভিডিও কন্টেন্ট

৪ টা স্ট্যাটিক কন্টেন্ট এবং

পুরনো একটা ইভেন্টের কিছু ছবি

হাতে সময় ছিলো ২০ দিন, টোটাল ইউনিট ১০০০, পার ইউনিট প্রোডাক্ট প্রাইস ১০০০।

আমাকে বলা হয়েছিল ROAS নিশ্চিত করতে হবে ১:১০। অর্থাৎ প্রতি ১০০০ টাকা সেল জেনারেট করার জন্য আমি প্রায় ১০০ টাকা পাচ্ছি। তবে সুখের কথা হচ্ছে বাকেটে প্রোডাক্ট দুইটা বা তার বেশি ঢুকে গেলে Everage Basket Size টা কমে আসে আর কি।

এবার পালা ক্যাম্পেইনে যাবার।

বাস্কেট সাইজ ১.৫ ধরে মোট ট্রাঞ্জেকশন দরকার ৬০০। অর্থাৎ ৬০০ মানুষের কাছে ১০০০ টিকেট সেল করতে হলে ওয়েবে আমার ট্রাফিক নিতে হমে কম করে হলে ও ৬০,০০০ জন। কারণ অভিজ্ঞতা বলে সাধারণত ১-২% এর বেশি কনভারশন রেট পাওয়া যায় না। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনে সর্বোচ্চ ১-২ জন পারভেজ করতে আগ্রহ দেখাতে পারে।

হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র‍্যাক্টিস করতে চান?

এবার আসি বায়িং স্টেজে। টোটাল বায়িং স্টেজকে মোট ৪ টা ভাগে ভাগ করলাম।

1. ল্যান্ডিং পেজে ট্রাফিক পাঠালাম

2. ইভেন্ট এড থেকে ইভেন্ট রেস্পন্স আনলাম

3. মাল্টিপল এড তৈরি করে ৫ টা ভিডিও কেই ভিডিও ভিউতে দিলাম

4. হাতে থাকা স্টাটিক গুলো দিয়ে সামান্য কিছু রিচ এড দিলাম ফ্রিকোয়েন্সি ৩ রেখে

5. সেম স্টাটিক গুলো দিয়েই অল্প কিছু ম্যাসেজ এড দিলাম যেন মানুষ তাদের জিজ্ঞাসা গুলো করতে পারে

একটু বলে নেই এই ইভেন্টে যারা স্পিকার ছিলেন তারা প্রত্যেকেই বেশ ইনফ্লুয়েন্সিয়াল লেভেলের মানুষ ছিলেন যে কারণে আমার ধারণা ছিলো আমরা যদি প্রথম ১ সপ্তাহ ২০০ ডলার খরচ করে মানুষকে ওয়ার্ম করতে পারি তবে এই ওয়ার্ম ওডিয়েন্সের ডাটা দিয়েই পরের ১৫ দিনে বাকি বাজেট ব্যাবহার করে বেশ কিছু রিটার্গেট ক্যাম্পেইন লঞ্চ করতে পারলেই খেলা জমে যাবে এবং হয়েছে ও তাই। 

উপরের পয়েন্টটা মাথায় রেখে আমি অডিয়েন্স স্টেজকে দুইটা ভাগে ভাগ করি। যেহেতু স্পিকাররা প্রত্যেকে ইনফ্লুয়েন্স রাখে সো আমি উনাদের প্রত্যেকের পারসোনাল পেজের এক্সেস নিয়ে ফেলি এবং তাদের পুরনো অডিয়েন্স থেকে বেশ কিছু কাস্টম অডিয়েন্স বানাই। এবং এই কাস্টম অডিয়েন্সের কাছে ডিরেক্ট সেলস এড পাঠিয়ে দেই। আর তাদের কাস্টম অডিয়েন্স কে কাজে লাগিয়ে বানিয়ে ফেলি বেশ কিছু Lookalike Audience. আর এই অডিয়েন্সের কাছে পাঠিয়ে দেই আমার হাতে থাকা ভিডিও গুলো। এবং সেই ভিডিও থেকে আবার তৈরি করি Custom Audience, এবং সেই কাস্টম অডিয়েন্সের কাছে আবার পাঠাই সেলস এড।

ভিডিও ভিউস থেকে যা যা ভিউস পাইছি তার মধ্য থেকে ১৫ % ভিউসের প্রত্যেককে পরবর্তীতে রিটার্গেট করে ওয়েবে নেয়ার ব্যাবস্থা করেছি।

যারাই ল্যান্ডিং পেজ ভিউ করছে তাদের কাছ থেকে লিড কালেক্ট করে নেই। কারণ আমাদের একটা কল সেন্টার ছিলো এবং সেই কল সেন্টার থেকে পরে ফলোআপ কল করে ও বেশ কিছু টিকেট সেল করা হয়। এই সব কিছুর সাথে আরেকটা কাজ করছিলাম সেটা হলো আমরা ইভেন্ট শুরুর আগের দিন ডিসিশান নেই ইভেন্টের দিন আমরা On Spot Registration এর ব্যবস্থা রাখবো। এবং এটা মাথায় রেখে ইভেন্ট শুরু হবার ঠিক একটা দিন আগে একটা এনগেজমেন্ট ক্যাম্পেইন ছেড়ে দেই এটা জানিয়ে যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশান মিস? প্যারা নাই On Spot আপনার জন্য। টার্গেটে কারা ছিলো? আর কারা, গত ১৯ দিন ধরে যারা ধুমাইয়া ল্যান্ডিং পেজ ভিউ করছে তারা। মজার কথা হলো, On Spot Registration থেকেই ৪০+ সেল আসছে এবং আমরা ঢাকার বাইরের অডিয়েন্সদের জন্য অনলাইনে ব্রডকাস্ট করার ব্যাবস্থা রেখেছিলাম এবং অনলাইনের জন্য ও প্রায় ৯০+ টিকেট সেল হয়ে যায়।

এবার পালা ইভেন্ট শুরুর, ইভেন্টের দিন ইভেন্ট লোকেশানে গিয়ে মনটাই ভরে গেলো। কারণ, যেই দিকেই তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ। এক কানাকড়ি ও জায়গা ফাকা ছিলো না। আহা, কি শান্তি।

বাকি রইলো বাজেট ব্রেকডাউন করার। যেহেতু ওই কোম্পানীর জন্য এটাই আমার প্রথম ক্যাম্পেইন তাই আমার মাথায় ছিলো ১০০০ ডলার বাজেটকে ৭০০ ডলারে কাভার করে ফেলার। তাই আমি সমস্ত বাজেট প্ল্যানিং ৭০০ ডলার ধরেই করেছি। যদি ও সেটা ৮৫০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। বাজেট এলোকেশানটা আমি অলওয়েস পারসেন্টেজ দিয়ে করতে পছন্দ করি। শুরুতেই আমি এমন একটা অব্জেক্টিভের পিছনে বাজেট সেট করছি যেটা আসলে কেও সাধারণত রাখে না। কিন্তু আমি রাখছি, আমি শুরুতেই ৫% বাজেট রাখছিলাম রিচ ক্যাম্পেইনের জন্য। এটা ব্যাক্তিগত ভাবে আমার পছন্দের একটা অব্জেক্টিভ। কারণ এই একটা অব্জেক্টিভে আমি ফ্রিকোয়েন্সিকে দারুণ ভাবে কন্ট্রোল করতে পারি এবং এই ক্যাম্পেইনে ও তাই করেছি। পার ডে ৩ ফ্রিকোয়েন্সিতে ফ্রিকোয়েন্সি ক্যাপ বসিয়েছিলাম। একটা কথা বলে রাখি Reach ক্যাম্পেইন আমি তখন ই ব্যাবহার করি যখন আমার হাতে ওয়ার্ম অডিয়েন্সের ডাটা থাকে।

আর ৫% বাজেট সেট করেছিলাম ইভেন্ট পেজ প্রমোশনে, ২০% বাজেট সেট করেছিলাম ভিডিও ভিউস এ আর ২০% বাজেট সেট করেছিলাম অডিয়েন্সকে ল্যান্ডিং পেজ ভিসিট করাতে। বলে রাখি ট্রাফিক এবং রিচ ক্যাম্পেইনে আমার ক্রিয়েটিভ হিসেবে ছিলো ভিডিও, ইমেজ এবং পুরনো ইভেন্টের ছবি। অর্থাৎ দুইটা ক্যাম্পেইনেই Advantage plus campaign budget সেট করা হয়েছিলো।

এই গেলো টার্গেটের পালা এবার করেছি রিটার্গেট। সেকেন্ড স্টেজে এসে Conversion এর পিছনে খরচ করেছি ৪০% বাজেট। ম্যাসেজের পিছনে খরচ করেছি ৫% বাজেট আর others ক্যাম্পেইনের পিছনে খরচ করেছি আর বাকি ৫% বাজেট। এই রিটার্গেট স্টেজে এসে আমরা Early Bird অফার এবং FOMO (Fear of Missing Out) এ বেশি ফোকাস করেছিলাম।

যদি ও আমি আগেই বলেছি ৭০০ ডলারে কাজটা আমি শেষ করতে পারি নাই। বাজেট আমার কিছুটা বেশি লেগেছে এর মধ্যে এক্সট্রা কিছু বাজেট খরচ করেছিলাম On Spot Registration আর Online Registrtaion অফারের পিছনে।

সব শেষে এসে এভাবে ইতি টানতে চাই যে, আমার ক্লায়েন্টের মুখে ইভেন্টের দিন ব্যাপক হাসি ছিলো। আরকি চাই, ক্লায়েন্ট খুশি তো আমি ও খুশি।

Share:

"ইফেক্টিভ ফানেল স্ট্রেটিজি" ফ্রি ইবুকটি ডাউনলোড করতে নিচের ফর্মটি ফিলাপ করুন

আরো ব্লগ

লিড জেনারেশন করলে অডিয়েন্স থাকবে হাতের মুঠোয়!!

আমরা যারা অনলাইনে বিজনেস করি আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা ম্যাসেঞ্জারে ক্লায়েন্টের সাথে ডিল ক্লোজ করতে পারি না। আমরা ম্যাসেজ তো পাই হাজারে

ভিসিবিলিটি ইজ মোর ইম্পরটেন্ট দ্যান এভেইলেবেলিটি

চা খেতে বের হয়েছিলাম। প্রথম চুমুক টা দিতেই অপর পাশের মুদি দোকানে চোখ গেলো। একজন লোক শার্ট প্যান্ট ইন করে তেলের বোতল গোছাচ্ছে। মোটামুটি ১৫/২০

লগরিদম ভাল না লাগলেও আপনাকে এলগরিদম জানাই লাগবে!!

আমরা যারা ফেসবুকের এডভারটাইজমেন্ট নিয়ে কাজ করি আমাদের সব থেকে বড় প্রব্লেমটা কি জানেন?  প্রব্লেমটা হলো আমরা লাখ লাখ টাকার এড  ফেসবুকে ঠিকই চালাই কিন্তু

আই লেভেল ইজ বায় লেভেল!

ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে, Where there is will, There is a way. আর তাই কাস্টমারের সোস্যাল বিহেভিয়ার বা পারচেজ বিহেভিয়ারে প্রভাব ফেলতে দিনের পর দিন