আচ্ছা প্রথমেই একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি একজন বিজনেস ওউনার, কাস্টমার, চাকরিজীবী কিংবা বিজনেস পার্টনারদের মধ্যে মিল কোথায় বলুন তো? একবারে সহজভাবে বলতে গেলে তারা প্রত্যেকেই মানুষ, ঠিক না! একটা ব্রান্ড কে আমরা মাঝে মাঝে রোবটিক করে ফেলি। যেটা আমাদের ব্রান্ডগুলোর মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালে Global consumer insights survey এর মতে প্রতি ৩ টি ব্রান্ডের মধ্যে মাত্র ১ টি ব্রান্ড মানুষের ট্রাস্ট গেইন করতে পারে। এর ফলে কাস্টমার তাদেরকে authentic ফিল করে।
কেউ নিজেদেরকে প্রফেশনাল ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করে। Sounding human আর Being human কিন্ত এক নয়। অনেক ব্রান্ডের এন্ড অফ দ্যা ডে মেইন টার্গেটই থাকে Being human. সব কথার এক কথা হলো আপনার ব্র্যান্ডকে হিউম্যানাইজ করার কথা এখনো আর বসে বসে ভাবার সময় নাই হিউম্যানাইজ করা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এখন ব্রান্ডগুলোর সাথে কানেক্ট থাকতে পছন্দ করে। এবং তাদের সেই পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর থেকেই তারা প্রোডাক্ট কিনতে এবং ব্র্যান্ডগুলোকে ফলো করতে পছন্দ করে। মানুষের সাথে নিজের ব্রান্ডকে interact করার জন্য আপনার মার্কেটিং হতে হবে আরো magnatic.
এবার আসুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে একটা ব্রান্ডকে হিউম্যানাইজ করা যায়ঃ
১. কোম্পানির ইনসাইট আপডেট সব জায়গায় শেয়ার করুনঃ
আপনার কোম্পানির এমপ্লয়িরা যদি কোনো ডেডলাইন কিংবা টার্গেট সফলভাবে শেষ করতে পারে বা আপনার কোম্পানি কোনো এওয়ার্ড জিতে নেয় তবে তা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পোস্ট করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার এমপ্লয়িদের কে in-house amplifier হিসেবে ইউজ করতে পারেন। Amplifier এর মাধ্যমে বিদ্যুতের ভোল্টেজ বাড়ানো হয়। সো, আপনার এমপ্লয়িরা আপনার ব্রান্ড ভ্যালু নিয়ে কাজ করবে। মনে রাখবেন,”Culture beats strategy.”
তাছাড়া আপনার অফিসকে আপনার Brand Color অনুযায়ী ডেকোরেট করে একটা অফিস ট্যুর ভিডিও ওয়েবসাইট কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন। যখন এই সকল বিষয় আপনার অডিয়েন্স নিয়মিত দেখতে থাকবে তখন আপনার প্রতি অন্য রকম একটা trustness কাজ করবে।
হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র্যাক্টিস করতে চান?
২. সবসময় প্রোফেশনালি না থেকে মাঝে মাঝে ফানি কিছু ট্রাই করুনঃ
ফানি এড বানিয়ে বিভিন্ন বোরিং ব্রান্ডও ইন্টারেস্টিং হয়ে উঠেছে। মোটকথা, আপনার কন্টেক্ট গুলো Professional, Educational এবং Technical হওয়ার পরেও এগুলোকে ইন্টারেস্টিং করার জন্য সাথে এড করতে পারেন fun, caring এবং engagement টোন। মনে রাখবেন ৩ টা জিনিস এই একটা ব্রান্ডকে Trusted এবং Valuable হতে হেল্প করেঃ
1. Fun
2. Approcablity
3. Humanity
৩. অডিয়েন্সের ভাষায় কথা বলুনঃ
আপনার কাস্টমার হতে পারে নানা ধরনের কিন্ত আপনার কাস্টমার কখনই চাইবে না যে আপনি তাদের সাথে সেলসের গল্প করেন। কিন্ত, এখন কথা হল তাহলে কিসের গল্প বলবেন! আপনাকে কাস্টমারের সাথে গল্প করতে হবে বিভিন্ন ইনফর্মেটিভ ওয়েতে, বিভিন্ন ইমোশনাল কন্টেন্ট এর মাধ্যমে। মোটকথা, আপনি কাস্টমারের ভাষা যত শিখবেন আপনার ব্রান্ড ততটা humanize হিসেবে তাদের কাছে পরিচিতি লাভ করবেন।
অনেক সময় দেখা যায়, আপনি হঠাৎ করে একটা ইনভেস্টমেন্ট পাওয়ার পর অডিয়েন্স থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। এই ব্যাপারটাকে বলে “Curse of knowledge.” যার ফলে দেখা যায় আপনার এবং অডিয়েন্স এর সাথে একটা Communication গ্যাপ তৈরি হয়।
যাই বলেননা কেন clearly কথা বলুন। যেমন ধরুন, আপনি যদি আপনার বন্ধুর সাথে কথা বলতে গিয়ে নানা জার্গন ইউজ করেন অই টপিক রিলেটেড তাহলে কি আপনার বন্ধু কিছু বুঝবে বা আপনার সাথে কথা বলতে কমফোর্ট ফিল করবে? তেমনি কাস্টমার এর ক্ষেত্রেও সেইম কেস। আপনি কাস্টমারের সাথে যতটা ফ্রেন্ডলি কথা বলবেন তারা আপনাকে ততটা হিউম্যান ফিল করবে।
৪. কাস্টমার কে যত বেশি সম্ভব বেনিফিট দেয়ার চেষ্টা করুনঃ
অডিয়েন্সকে সব সময় সেল রিলেটেড কন্টেন্ট ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বেনিফিট অডিয়েন্সকে দিতে পারেন। এতে অডিয়েন্স আপনার কন্টেন্ট এর প্রতি এংগেজ থাকবে বেশি। এর মাধ্যমে আপনার সাথে অডিয়েন্সের একটা চকৎকার রিলেশন বিল্ড হবে। তাদেরকে আপনি ইন ফিউচার spokesperson কিংবা ambassador হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। যেখানে তারা বিভিন্ন জায়গায় আপনার ব্রান্ড কে represent করবে।
সুতরাং, যাই হোক না কেন চেষ্টা করুন দিনশেষে আপনার অডিয়েন্সকে এমন কিছু দিতে যা দিনশেষে অডিয়েন্সের যেনো বেনিফিট হয় আপনার কোম্পানির না। এটাই ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর মূল থিম।
৫. ফ্যান ফলোয়ারদের সাথে এনগেইজড থাকুনঃ
সবসময় আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সকে নিয়ে পোস্ট না দিয়ে মাঝে মাঝে আউটসাইড পিপল নিয়েও পোস্ট করতে পারেন। এতে আউটসাইড পিপল আপনার ব্রান্ডকে আলাদা ভাবে ফিল করবে। তাছাড়া, আপনার অডিয়েন্সের প্রতিটি কমেন্টে কিংবা ম্যাসেজের রিপ্লাই গুরুত্বের সাথে দেয়ার চেষ্টা করুন নিয়মিত। এবং মাঝে মাঝে ফান এবং সিজনাল কিছু পোস্ট করতে পারেন।
৬. প্রতিটি Funnel stage এ কানেক্ট হওয়াঃ
এডভার্টাইজিং এর ক্ষেত্রে Funnel এর প্রতিটি স্টেজে অডিয়েন্স কে বিভিন্ন ভাবে কানেক্ট করুন। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যে ভুলটা করি। এড চালিয়ে দিয়ে প্রথমেই CTA বাটন হিসেবে “Buy Now” ইউজ করে ফেলি।
কিন্ত, TOFU- Top of the Funnel এ কাস্টমারকে শুধুই বেনিফিট বা কোনো সমস্যার সমাধান দিতে হবে। যেমনঃ How to বা Ways to do বা Tutorial বা Hacks. এতে ভিডিও বেশি effective হবে। কেননা, এক সার্ভেতে দেখা গেছে ভিডিও দেখে মানুষ শিখতে পছন্দ করে।
তারপর, MOFU- Middle of the Funnel এ গিয়ে কাস্টমার কে যেই বিষয়ে লার্নিং করেছেন সেই প্রব্লেম গুলোর সলিউশনে তার যেই প্রোডাক্ট গুলো দরকার সেগুলো বোঝাতে হবে। এরপর ফাইনালি BOFU তে গিয়ে যখন কাস্টমার কে CTA বাটন হিসেবে Buy Now বলবেন তখন তিনি কিনবে নিজ ইচ্ছায়। কারণ সে আপনার থেকে অনেক কিছু শিখেছে এতে আপনি তার কাছে ট্রাস্টেড ব্রান্ড হয়ে গেছেন। এই ব্যাপারটা কে মার্কেটিং এর ভাষায় বলে Buyers Journey. দিনশেষে Humanizing এর জন্যই কিন্তু সেল জেনারেট হয়।
অবশেষে বলা যায়, একটা ব্রান্ডকে হিউম্যানাইজ করলে নানা বেনিফিট রয়েছে। এর মাধ্যমে আপনার ব্রান্ড একজন মানুষের কাছে বন্ধুর মত প্রিয় হয়ে উঠে রোবোটিক না হয়ে। তাছাড়া, আপনার ব্রান্ডিং অবশ্যই হতে হবে Creative এবং Spontaneous. সো, দেরী না করে টিপস গুলো কাজে লাগিয়ে আজ থেকেই শুরু করে দিন।