বায়ারস জার্নি বুঝি – কাস্টমারকে আজীবন ধরে রাখি!

বর্তমান মার্কেট হচ্ছে  বায়ার ড্রিভেন মার্কেট তাই বায়ারের জার্নি জানা এবং বুঝাটা একজন সেলারের জন্য সব থেকে জরুরী জিনিস।

প্রথমেই প্রশ্ন আসে বায়ারস জার্নি ব্যাপারটা কি?

The buyer’s journey is a framework that outlines how buyers arrive at a purchasing decision.

বায়ারস জার্নি হলো মূলত একটা ফ্রেমওয়ার্ক যেখানে খুজে বের করা হয় একজন বায়ার প্রোডাক্ট কিনার আগে কিভাবে রিসার্চ করে এবং কি কি ধরনের প্রব্লেম ফেস করে সেটা বের  করে কাস্টমারের কাছে সেল করার আগ পর্যন্ত তার জন্য একটা পজিটিভ জার্নি তৈরি করা।

এই বায়ারস জার্নিকে যদি এক কথায় ডেস্ক্রাইব করতে বলা হয় তাহলে আমি বলবো, “The customer’s path to purchase” 

Buyers Journey কে মোট চারটা স্টেজে ভাগ করা যেতে পারে।

Awarenesses Stage > Consideration Stage > Decision Stage > Delight Stage

এই পুরো প্রসেসকে আমরা একটা সেলস ফানেল দিয়ে ও দেখাতে পারি। আমাদের এই ফানেলের শুরুতে আমাদের পটেনশিয়াল কাস্টমার থাকে একদম ই Unaware. অর্থাৎ সে আমার সম্পর্কে যানেই না, আমাকে সে চিনেই না। সো এই স্টেজেই যদি আমরা একজন কাস্টমারের কাছে সেলস করতে চাই তবে সেই সেলস না হবার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।

তাহলে বায়ারস জার্নি এর শুরুটাই হতে যাচ্ছে কাস্টমারকে Aware করার মধ্য দিয়েই। এই স্টেজে একজন কাস্টমার ফিল করেতার একটা  PAIN POINT আছে। কিন্তু সে যানে না সেই পেইন পয়েন্ট এর সলিউশান কি। সে সম্ভবত সেই সলিউশান খুঁজে ওনা। কারণ সে যানেই না যে এই প্রব্লেমের স্পেসিফিক কি সলিউশান মার্কেটে এভেইলেবল আছে।তাই এই স্টেজে একজন কাস্টমারশুধু ইনফরমেশান সার্চ করে। 

এটা কি ধরনের প্রব্লেম?

এই প্রব্লেম কেন হয়?

হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র‍্যাক্টিস করতে চান?

যদি আমরা একটা উদাহরণ দিয়ে ভাবি: ধরুন আপনার বিজনেসে সেল নাই। এইটা একটা প্রব্লেম তাই না? আপনি আপনারপ্রব্লেম সম্পর্কে যানেন ঠিক ই কিন্তু এর সমাধান কি সেটা জানেন না। এই মোমেন্টে আপনার জিজ্ঞাসা থাকে, ভাই আমার সেলনাই কেন? 

ঠিক এই মোমেন্ট এ আপনাকে আপনার প্রব্লেম টা সম্পর্কে জানানোই হল এওয়ারনেস স্টেজ।

Customer journey এর সেকেন্ড স্টেজ হলো Consideration. এই স্টেজে একজন কাস্টমার যানে এক্সাক্টলি কি তার প্রব্লেম এবং সেই প্রব্লেমের জন্য সে বেস্ট সলিউশানটা খুঁজতে থাকে এবং  বেস্ট সলিউশন প্রোভাইডারকে ও খুঁজতে থাকে।

সে হয়তো সার্চ করতে থাকে এভাবে, Best Digital Marketing Course in Bangladesh বা Best Digital Marketing Agency in Bangladesh.

আর তারপর ই আসে Decision Stage. এইখানে বায়ার তার হাতে থাকা বেস্ট এজেন্সি বা বেস্ট কোর্স গুলোর অল্টারনেট অপশন গুলোর মধ্যে কোনটা বেস্ট হবে এটা বুঝার চেষ্টা করে।সে আবার রিসার্চ করে, কোম্পানী পেজ বা ওয়েবসাইট বারবার ভিসিট করে, টেস্টিমোনিয়াল খোঁজার ট্রাই করে, ভিডিও কন্টেন্ট খোজে এবং সর্বোপরি সে একটা কমিটমেন্ট চায়  আপনার কাছ থেকে যে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটা সে নিবে এটা কি আসলেই তার প্রব্লেমের সমাধান করতে পারবে?

সো উপরের আলোচনা থেকে একটা জিনিস আমরা কনফার্ম হতে পারি যে বেশিরভাগ কোম্পানী বা বিজনেস তাদের কাস্টমার জার্নি এর একদম বটম লাইন মানে Decision Stage নিয়ে কাজ করে। একটা রিসার্চ বলে এই সংখ্যাটা ৯৬%। অর্থাৎ মাত্র৪% বিজনেস প্রপারলি তাদের কাস্টমার জার্নিকে স্মুথ বানানোর ট্রাই করে আর বাদ বাকি ৯৬% বিজনেস জানেই না তারা যেএটা করছে না।

উপরে যা শিখলাম আসুন সেটাই এবার প্র‍্যাক্টিস করি। ধরে নিন আপনি একজন বিজনেস গ্রোথ এনালিস্ট। সো এখন আপনি একজন গ্রোথ এনালিস্ট হিসেবে ভাবুন আপনার সার্ভিস সেল করার জন্য আপনার বায়ারস জার্নিটা কেমন হওয়া উচিত। 

  1. আপনার Unaware কাস্টমারকে শুরুতেই Aware করতে হবে।
  2. আপনার কাস্টমারদের জন্য আপনি ই বেস্ট সলিউশান সেটা ফিল করাতে হবে
  3. আপনার কাস্টমারকে এমন কোন একটা ভ্যালু দিতে হবে বা আপনার USP কে এমন ভাবে ফোকাস করতে হবে যেন আপনার কাস্টমার আপনাকেই চয়েজ করে বসে।

চতুর্থ স্টেজ মানে DELIGHT স্টেজ নিয়ে কথা বলার আগে একটা ছোট গল্প শেয়ার করতে চাই। আমি এজেন্সি ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ হবার কারণে আমার একবার সুযোগ হয়েছিল Yamaha (ACI Motors) ব্র‍্যান্ডের ব্র‍্যান্ড টিমের সাথে একটা মিটিং এবসার। সেই মিটিং এ তাদের ব্র‍্যান্ড টিম আমাকে বাংলাদেশে Yamaha এর যে সেলস ফানেল স্টাবলিশ ছিলো সেটা নিয়ে একটা ব্রিফিং দেন। সেই ৩ লেয়ার সেলস ফানেলের লাস্ট স্টেজ ছিলো Delight /Advocacy. এই শেষ লেয়ারে বা Delight স্টেজে তারাযেটা করতো সেটা সম্ভবত পৃথিবীর বেস্ট Delight স্টেজ গুলোর একটা। Yamaha Motors এর একটা ফেসবুক কমিউনিটি গ্রুপ আছে, নাম হলো Yamaha Riders Club বা YRC. এখন প্রশ্ন হলো এই ক্লাবে হয়টা কি? আপনি যখন একটা Yamaha Bike কিনবেন কয়েকটা প্রসেস (ফরম ফিলাপ, লার্নার কার্ড হ্যান্ডঅভার, ফরমাল মিটিং ইত্যাদি) পাড় হয়ে আপনাকে সেই Riders Club এর গ্রুপে জয়েন করানো হবে। আর সেই গ্রুপে যদি আপনি ঢুকে যান তাহলে আপনি দেখতে পারবেন গ্রুপে নানা ধরনের এক্টিভিটি ৩৬৫ দিন চলতেই আছে। কখনো তারা বারবিকিউ পার্টি করতাছে, কখনো তারা গাজীপুরের কোন এক রিসোর্টে ঘুরতে যাচ্ছে, কখনো লং ড্রাইভে যাচ্ছে, কখনো বাংলাদেশ ট্যুরে কেও বের হচ্ছে আর ইয়ামাহা  তাকে স্পন্সর করছে, ডিস্কাউন্ট বা অফারবা ফ্রি বাইক ওয়াশ এসব তো সারা বছর দিয়েই যাচ্ছে এইরকম আরো নানান এক্টিভিটি আপনার নজর কাড়বে এবং ইয়ামাহা এর সাথে  আপনাকে সর্বদা এক্টিভ রাখবে। আর এই যে আপনাকে প্রোডাক্ট সেল করে দেয়ার পর ও আপনাকে একা ছেড়ে নাদিয়ে সাথ করে নিয়ে চলাটাকেই বলে Delight Stage আর যার ফলে তৈরি হয় Advocacy. অর্থাৎ একজন বাইকারআরেকজন পটেনশিয়াল বাইকের কাস্টমারকে Yamaha সাজেস্ট করেই করে। কারণ এই বাইকার যেমন তেমন বাইকার না, এই বাইকার একজন Delighted বাইকার।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আছে কিভাবে  আমি আমার কাস্টমারদের জন্য বায়ারস জার্নি তৈরি করব।

আর এই খানে এসে আপনাকে সাহায্য নিতে হবে মার্কেটিং এর সব থেকে বড় টুলস এর কাছ থেকে।

আর সেটা হলো CONTENT

ইয়েস এইবার আপনাকে কন্টেন্টের খেলা খেলতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার অডিয়েন্স কোন স্টেজে কি লিখে খোজাখুজি করতে পারে। কি হতে পারে তার সার্চ কি ওয়ার্ড। সেই কি ওয়ার্ড বেইজ করেই আপনাকে একেক স্টেজে একেক ধরনের কন্টেন্ট বানাতে হবে। এবং তাকে সেলস ফানেলের মাধ্যমে রিটার্গেটিং এপ্রোচে একটা একটা স্টেজ ঘুরিয়ে আনতে হবে। 

আর এখানেই মূলত ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে একটা বড় ব্যাবধান তৈরি করে। ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এ কাস্টমারের জন্য আউটবাউন্ড মার্কেটিং এনভাইরনমেন্ট তৈরি করা হয়। কারণ ট্রেডিশনালে কাস্টমারের এটেনশননিয়ে তাকে জানানো হয় এক্সাক্টলি কি তার প্রয়োজন। এখানে প্রয়োজন বুঝানোর সাথে সাথে কাস্টমারকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করা হয় না বা সম্ভব হয়ে উঠে না। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এই এক জায়গাতে এসে ছক্কা মেরে দেয়। কাস্টমারের প্রব্লেম নিয়েকথা বলে তার সলিউশান খুঁজে পেতে হেল্প করে একটা ইনবাউন্ড মার্কেটিং এনভায়রনমেন্ট তৈরি করে দেয়

কয়েকটা স্ট্যাটিস্টিক্স শেয়ার করলে আপনার পাওয়ার অফ বায়ারস জার্নি বুঝতে সুবিধা হবে।

  1. ৭১% B2B পারচেস শুরু হয় কন্টেন্ট সার্চ করার মধ্য দিয়েই। B2B বায়াররা ডাইরেক্ট কোন ব্র‍্যান্ড সিলেক্ট করার আগে তারা রিসার্চ করে ডিসিশান নিতে পছন্দ করে।
  2. ৫২% কাস্টমার ভেন্ডর সিলেক্ট করার আগে কম করে হলে ও ৮ টা কন্টেন্ট ফেস করে ফেলে।
  3. ৬৫% বায়ার প্রোডাক্ট কিনার আগে এভারেজে ১৬ মিনিট টাইম স্পেন্ড করে ইন্টারনেটে তার প্রোডাক্ট বা সেলারের মধ্যে কম্পারিজন করার জন্যে।

আর এ কারণে বায়ারস জার্নি Flow কে Mapping Buyers Journey ও বলা হয়।তাই সঠিক ভাবে বায়ারস জার্নি ডিফাইন করতে পারলে রাইট কন্টেন্ট আপনি রাইট টাইমে প্লেস করতে পারবেন।

আর এই রাইট + রাইট আপনার বিজনেসের গ্রোথ নিশ্চিত করবে।

যদি হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেকে মার্কেটে স্টাবলিশ করতে চান তবে এখনি এনরোল করে ফেলুন আমার প্রিমিয়াম কোর্স:

​​​​​”Digital Marketing RoadMap” এ…

Share:

"ইফেক্টিভ ফানেল স্ট্রেটিজি" ফ্রি ইবুকটি ডাউনলোড করতে নিচের ফর্মটি ফিলাপ করুন

আরো ব্লগ

লিড জেনারেশন করলে অডিয়েন্স থাকবে হাতের মুঠোয়!!

আমরা যারা অনলাইনে বিজনেস করি আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা ম্যাসেঞ্জারে ক্লায়েন্টের সাথে ডিল ক্লোজ করতে পারি না। আমরা ম্যাসেজ তো পাই হাজারে

ভিসিবিলিটি ইজ মোর ইম্পরটেন্ট দ্যান এভেইলেবেলিটি

চা খেতে বের হয়েছিলাম। প্রথম চুমুক টা দিতেই অপর পাশের মুদি দোকানে চোখ গেলো। একজন লোক শার্ট প্যান্ট ইন করে তেলের বোতল গোছাচ্ছে। মোটামুটি ১৫/২০

লগরিদম ভাল না লাগলেও আপনাকে এলগরিদম জানাই লাগবে!!

আমরা যারা ফেসবুকের এডভারটাইজমেন্ট নিয়ে কাজ করি আমাদের সব থেকে বড় প্রব্লেমটা কি জানেন?  প্রব্লেমটা হলো আমরা লাখ লাখ টাকার এড  ফেসবুকে ঠিকই চালাই কিন্তু

আই লেভেল ইজ বায় লেভেল!

ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে, Where there is will, There is a way. আর তাই কাস্টমারের সোস্যাল বিহেভিয়ার বা পারচেজ বিহেভিয়ারে প্রভাব ফেলতে দিনের পর দিন