কেন আপনার বুস্ট না করে এড ক্যাম্পেইন নিয়ে কাজ করা উচিৎ এই একটা প্রশ্নের উত্তর খুজে খুজে যদি টায়ার্ড হয়ে থাকেন তবেএই কন্টেন্ট টা আপনার জন্যই।
সাধারণত একটা ফেসবুক বুস্ট করার জন্য আমাদের দরকার হয় একটা ফেসবুক পেজ এবং একটা পারসোনাল এড একাউন্ট।যেখানে আমরা আমাদের ব্যাংক কার্ডটা এড করে সেই কার্ডের ডলার খরচ করে আমাদের একটা পেজ পোস্টকে বুস্ট করে দেই।আর তা মানুষের ওয়ালে ওয়ালে পৌছে যায়।
এই একই কাজ করে যদি আপনি আপনাকে একজন ডিজিটাল মার্কেটার বা মিডিয়া বায়ার বলে দাবী করে থাকেন তবে আপনি ভুলে ভরা জীবন কাটাচ্ছেন ভাই।
আসেন ভুল ভাংগি, আমি ও আপনাকে এখন একটা কন্টেন্টকে বুস্ট করার অপশন দেখিয়ে দিবো তবে সেটা হবে অনেক বেশি প্রফেশনাল উপায়ে, অনেক বেশি। তাহলে শুরুতেই আপনার মোবাইল বা পিসি থেকে সার্চ করুন www.business.facebook.com নামের এই সাইটটা। যেটা ফেসবুক তৈরী করেছে আমাদের মতন প্রফেশনাল মিডিয়া বায়ারদের জন্য। যারা শুধু মাত্র ৪/৫ টা অব্জেকটিভ নির্ভর বুস্টিং করে না। হ্যা সত্যি আমরা প্রফেশনালরা ফেসবুকের এইবিজনেস সাইট থেকে মোট ১৩ টা অব্জেকটিভ কে কেন্দ্র করে এডভারটাইজমেন্ট চালাতে পারি।
তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্যোগ্য হলো কনভারসন এড, ক্যাটালগ এড, ট্রাফিক এড, ব্র্যান্ড এওয়ারনেস এড, ম্যাসেজ এড ইত্যাদি। এছাড়া ও এই বিজনেস ম্যানেজার ব্যাবহার করায় আপনি এড মেট্রিক্স গুলোকে ভিসুয়ালাইজেয়াশান করতে পারবেন প্রপারলি। যেমন: আপনার এড এর CPC, CPM, CPR, Frequency, Attribution Setting ইত্যাদিকে খুব সহজেই মেজারকরতে পারবেন। আপনার ক্যাম্পেইনের ROAS বা ROI জানতে পারবেন এবং নিশ্চিত ও করতে পারবেন।
এছাড়া ও ম্যানেজার ব্যাবহার করার ফলে আপনার এডের উপর থাকবে আপনার অনেক বেশি কন্ট্রোল। এখানে বাজেট কন্ট্রোলিং বা স্কেলিং থেকে শুরু করে ক্যাম্পেইন বাজেট অপটিমাইজেশান করার ও উপায় আপনি একই ইন্টারফেসে পেয়ে যাবেন। এছাড়া ও এই এক ম্যানেজার থেকেই আপনি আপনার কন্ট্রোলে থাকা যে কোন পেজে পোস্ট করে ফেলতে পারবেন, ম্যাসেজের উত্তর দিতে পারবেন, কমেন্টের রিপ্লাই ওদিতে পারবেন। আপনার আর আলাদা আলাদা করে পেজ খুজে বের করে আলাদা আলাদা ম্যানেজ করার এফোর্ট দিতে হবে না।
এই ধরনের ক্যাম্পেইন চালাতে আমাদের কে শুরুতেই একটা বিজনেস ম্যানেজার ক্রিয়েট করে নিতে হয় আর সেই বিজনেস ম্যানেজারের ভিতরে থাকে একটা বিজনেস এড একাউন্ট। এছাড়া ও আমাদের পেজটা ও কানেক্ট করা থাকে একই সাথে বিজনেস ম্যানেজারের সাথে। যার ফলে আমরা বিজনেস ম্যানেজারের ভেতরে প্রবেশ করে একটা এড একাউন্ট ব্যাবহার করে যেকোন একটা পেজের এড চালাতে পারি। তবে মনে রাখতে হবে এর জন্য দরকার হবে একজন মানুষ। যে কিনা সেই বিজনেস ম্যানেজারের ভিতরে থাকবে বা আমরা তাকে ম্যানেজারে এড করে নিব। এছাড়া ও গ্রুপ অফ পিপল মানে কোন এজেন্সি কেএক্সেস দেয়ার জন্য বিজনেস ম্যানেজারে রয়েছে পার্টনার নামে আরেকটি অপশন।
হাতে কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং প্র্যাক্টিস করতে চান?
বিজনেস ম্যানেজার দুই প্রকার হতে পারে
- ভেরিফাইড ম্যানেজার
- নন ভেরিফাইড ম্যানেজার
খেয়াল রাখবেন আপনার একটা ফেসবুক আইডি থাকলেই কিন্তু আপনি একটা বিজনেস ম্যানেজার ক্রিয়েট করতে পারবেন।ইনিশিয়ালি যেই ম্যানেজার টা আপনি ক্রিয়েট করবেন সেটা হবে সাধারণত নন-ভেরিফাইড বিজনেস ম্যানেজার। আর আপনার বিজনেসের সমস্ত ডকুমেন্ট দিয়ে যখন আপনি একটা ম্যানেজার ভেরিফাই করিয়ে নিবেন সেটা হয়ে যাবে তখন ভেরিফাইড বিজনেস ম্যানেজার।
আমরা যখন বিজনেস ম্যানেজার নিয়ে কথা বলতেছি, তখন আরো দুইটা ম্যানেজার আমরা আমাদের বিজনেস ম্যানেজারের ভিতরে খুজে পাই। ম্যানেজার দুইটা হলো
- কমার্স ম্যানেজার
- ইভেন্ট ম্যানেজার
কমার্স ম্যানেজারের ভিতর থাকে কমার্শিয়াল কাজের সুবিধা। এই যেমন ধরেন নিজের বিজনেস পেজের জন্য একটা বিজনেসশপ তৈরি করে ফেলা বা বিজনেস ক্যাটালগ তৈরি করে ক্যাটালগ এড ক্যাম্পেইন রান করা।
বিজনেস শপটা আমরা কম বেশি সবাই বুঝি বা চিনি। ফেসবুক শপটা এখন বেশ অনেক ডায়নামিক। আপনি চাইলে আপনার শপকে আপনার বিজনেস ওয়েবসাইটের সাথে কানেক্ট করে নিতে পারেন। এর মানে দাঁড়াল আপনার শপ থেকে আপনি আপনার পেজে আসা ট্রাফিককে আপনার ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দিতে পারেন আর ম্যাসেঞ্জারে পাঠানোর অপশন তো আছেই।এছাড়া কমার্স ম্যানেজার মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার ওয়েবে আপলোড করা সমস্ত প্রোডাক্টকে অটোমেটিক আপনি শপে এনলিস্ট করে ফেলতে পারবেন। আর ম্যানুয়ালি করার অপশন তো পাচ্ছেন ই।
এইবার আসেন এই ক্যাটলগ জিনিসটা কি একটা ভেতরে ঢুকে দেখি। যদি আপনি একটা ইকমার্স বিজনেস বা লুক এ লাইক ইকমার্স বিজনেসের ওউনার হয়ে থাকেন তবে এই ক্যাটালগ ম্যানেজার আপনার জন্যই। ক্যাটালগ ম্যানেজারের একদম বেসিক কাজ হলো নিজের প্রোডাক্ট সেট নিয়ে একটা ক্যাটালগ তৈরি করে ফেলতে পারা। ক্যাটালগ মানে হলো খানিকটা রেস্টুরেন্ট ম্যানুএর মতন কিছু একটা। অর্থাৎ একটা ম্যানুতে আপনার প্রয়োজনীয় সব গুলো প্রোডাক্টকে লিস্ট করে ফেলতে পারবেন। ধরেনআপনি জুতো, জামা, প্যান্ট, ঘড়ি বিক্রি করেন। এখন এই সব কিছুর মধ্যে জুতোর আবার অনেক গুলো ব্র্যান্ড থাকতে পারে, অনেক গুলো ক্যাটাগরি ও থাকতে পারে। আপনি যখন জুতো নিয়ে এডভারটাইজমেন্ট এ যাবেন হয়তো একটা স্পেসিফিক ব্র্যান্ডনিয়ে যাবেন। তখন এই স্পেসিফিক ব্র্যান্ড নিয়ে এডে যেতে আপনাকে হয় সব গুলো প্রোডাক্টের ডিটেইল সহ পেজে একটা পোস্টকরে এডস ম্যানেজার থেকে এক্সিস্টিং পোস্ট সিলেক্ট করে এডে যেতে হবে। তবে এই এড কিন্তু ডায়নামিক কিছু হবে না। একদমসাধারণ একটা সাদা মাটা এড হবে। এই সাদা মাটা এড কে ইন্টারেস্টিং বানাতে হলে আপনাকে হয় Carousel Ad বা Instant Experience Ad বা Collection ad এর মতন ডায়নামিক কোন এড নিয়ে আপনাকে এডে যেতে হবে। আর এ ধরণের ডায়নামিক এড বানানোর একটা বিরম্বনা আছে। প্রতিবার আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট সেট নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে ইনপুটদেয়া লাগে। যেমন,প্রোডাক্ট নাম, ডিটেইলস, ওয়েব লিংক, প্রাইস, অফার, ডিস্কাউন্ট প্রাইস ইত্যাদি। বারে বারে এতো ইনফরমেশন ইনপুট দেয়াটা সত্যি অনেক সময় সাপেক্ষ ও বটে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আমাদের জন্য রয়েছে ক্যাটালগ নামের ভিটামিন।
ক্যাটালগ ম্যানেজারে গিয়ে আপনার কাজ হলো আপনার প্রোডাক্টের সেট বুঝে অনেকগুলা ক্যাটালগ তৈরি করে ফেলা আর যখন যেই সেট নিয়ে এডে যাবেন সেটা সিলেক্ট করে অটোমেটিক এডস ক্রিয়েটিভে খুঁজে পাওয়া।
এইবার আসেন ইভেন্ট ম্যানেজার নিয়ে একটু গল্প করা যাক। আপনি কি পিক্সেল নামটা এর আগে কখনো শুনেছেন? পিক্সেল হলো একটা জাভাস্ক্রিপ্ট কোড। এই কোডটা আমরা খুজে পাই আমাদের এই ইভেন্ট ম্যানেজারের ভিতরে। আমাদের কাজ হলো এই কোডটাকে ম্যানেজার থেকে কালেক্ট করে আমাদের ডেভেলপার ভাইজানকে দিয়ে দেয়া। ডেভেলপার ভাই এই কোডটা আমাদের সাইটে রেখে দিবে। কোডটা সাইটে রিপ্লেস করা মাত্র আমাদের ওয়েবসাইট এবং ম্যানেজার কানেক্টেড হয়ে যাবে এবংআমরা আমাদের এই পিক্সেল কোড ব্যাবহার করে নানা ধরনের ডাটা কালেক্ট করতে পারবো। ইভেন্ট ম্যানেজারে থাকা এইকোডকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- বেস কোড
- স্ট্যান্ডার্ড ইভেন্ট কোড
- কাস্টম ইভেন্ট কোড
প্রথমেই প্রশ্ন আসে ইভেন্ট কি? ইভেন্ট মানে ঘটনা। যখনি আপনার ওয়েবসাইটে একজন ট্রাফিক প্রবেশ করবে এবং সে কোনএকটা একশন নিবে তখনি সেটা একটা ইভেন্ট বলে কাউন্ট হবে। উদাহরণ নিলে, ধরেন একজন ট্রাফিক সাইটে প্রবেশ করা মাত্রহোম পেজটা লোড হয় এবং এইটাই একটা ইভেন্ট হিসেবে কন্সিডার হয়। কেও হয়তো কোন একটা ক্যাটাগরি পেজ ভিসিট করে, কেও কোন একটা প্রোডাক্টকে এড টু কার্ট করে, কেও পারচেজ বাটন ক্লিক করে, কেও বা আবার পেমেন্ট করে। এই যে এত গুলো এক্টিভিটি এই সব গুলো এক্টিভিটি ই কোন না কোন একটা ইভেন্ট হিসেবেই কাউন্ট হয় এবং আমাদেরকে পিক্সেল এই ইভেন্টেরবেসিসে ডাটা প্রোভাইড করে। আর সেই ডাটাকে ভিসুয়ালাইজ করে আমরা পরবর্তীতে আমাদের ওয়ার্ম অডিয়েন্সকে হট করার জন্যে রিটার্গেট বা রিমার্কেট ক্যাম্পেইন লঞ্চ করে থাকি।
রিমার্কেটিং ক্যাম্পেইনের একটা উদাহরণ দেই: ধরুন আপনার ওয়েবে মোট ১০০ টা এড টু কার্ট হয়েছে এখন এর মানে ওই না যে১০০ টা পারচেজ ও হয়েছে। আপনি ভালো করে নোটিশ করলে দেখবেন ১০০ এড টু কার্টের মধ্যে হয়তো ৩০ টা পারচেজ হয়েছেমাত্র। সো এর মানে দাঁড়ালো এমন ৭০ জন মানুষ আপনার ওয়েবে আছে যারা আপনার প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহী আছে ঠিকই কিন্তু কোন এক অজানা কারণে পারচেজ না করেই চলে গেছে।সো আমাদের ইভেন্ট ম্যানেজারের কাজই হলো ওই ৭০ জন মানুষকে খুজে বের করা এবং তাদেরকে রিটার্গেট করে ক্যাম্পেইন চালানোর ব্যাবস্থা করে দেয়া।
আমি জানি আপনি এখন ভাবছেন, আচ্ছা আমার তো ওয়েবসাইট নাই। তাহলে কি আমি এই রিটার্গেটিং ক্যাম্পেইন চালাতে পারবো না। আরেহ কি যে বলেন ভাই। আছে আছে আপনার জন্য ও ব্যাবস্থা আছে। আপনি ও খুজে বের করতে পারবেন আপনার ফেসবুক পেজে কারা ভিসিট করছিল, কারা এনগেজ হয়েছিল, কারা ম্যাসেজ করেছিল ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।আর পেজ থেকে পাওয়া এই ডাটা গুলোকে ব্যাবহার করে ও আপনি চাইলেই কিন্তু আপনার পেজের জন্য রিটার্গেটিং ক্যাম্পেইন লঞ্চ করে ফেলতে পারবেন এবং আপনার সেলসের পরিমাণ আরো ২০-৩০% বাড়াতে পারবেন এবং ব্র্যান্ড রিকল ভ্যালু বাড়াতে পারবেন ৬.৫% এর ও বেশি।
যদি হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেকে মার্কেটে স্টাবলিশ করতে চান তবে এখনি এনরোল করে ফেলুন আমার প্রিমিয়াম কোর্স: